কৃষি আয় এবং আয়কর/জিএসটি: একটি সম্পূর্ণ গাইড
ভারতবর্ষের একটি বিশাল অংশের মানুষের জীবিকা নির্ভর করে কৃষির উপর। কৃষি থেকে আয় এবং সেই আয়ের উপর কর বা ট্যাক্স (আয়কর এবং জিএসটি) কীভাবে ধরা হয়, তা নিয়ে অনেক ধোঁয়াশা রয়েছে। সাধারণ ধারণা হলো “কৃষি আয় সম্পূর্ণ ট্যাক্স-ফ্রি”। কিন্তু বাস্তবটা কিছুটা জটিল। এই গাইডে আমরা ধাপে ধাপে বুঝবো কৃষি আয়ের সাথে আয়কর এবং জিএসটি-র সম্পর্ক কী, কী নিয়ম, কোথায় ছাড় পাবেন এবং কীভাবে সঠিকভাবে পরিকল্পনা করবেন।
আয়কর (Income Tax) এবং কৃষি আয়
কৃষি আয় কী? (What is Agricultural Income?)
সহজ কথায়, কৃষি আয় হলো কৃষিকাজ থেকে যে আয় হয়। কিন্তু আয়কর আইন অনুযায়ী এর একটা নির্দিষ্ট সংজ্ঞা আছে। কোনো আয় কৃষি আয় হিসেবে গণ্য হতে হলে নিচের তিনটি শর্তের যেকোনো একটি পূরণ করতে হবে:
- জমির রাজস্ব বা ভাড়া: ভারতে অবস্থিত কোনো কৃষিজমি থেকে প্রাপ্ত ভাড়া বা রাজস্ব।
- কৃষিকাজ থেকে আয়: একই জমিতে কৃষিপণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে বা সেই পণ্য প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে যে আয় হয়, যা বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।
- খামারবাড়ি থেকে আয়: কৃষক দ্বারা জমির সাথে সংযুক্ত এমন কোনো বাড়ি বা স্থাপনা থেকে আয়, যা জমির কৃষক বা তার পরিবারের সদস্য দ্বারা ব্যবহৃত হয়।
কারিগরি তথ্য (Technical Aside): আয়কর আইন, 1961-এর ধারা 2(1A) অনুযায়ী কৃষি আয়ের সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এই সংজ্ঞায় তিনটি মূল বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে:
- ভারতে অবস্থিত কৃষিভূমি থেকে প্রাপ্ত যেকোনো ভাড়া বা রাজস্ব। (জমি থেকে মালিক কোনো ভাড়া (rent) বা রাজস্ব (revenue) পান, তাহলে সেই আয়কে “কৃষি আয়” (Agricultural Income) ধরা হবে।)
- এই ধরনের জমিতে কৃষিকাজের মাধ্যমে উৎপাদিত পণ্য বিক্রয় করে প্রাপ্ত আয়।
- এই জমির সাথে যুক্ত এমন কোনো খামারবাড়ি (Farm House) থেকে আয়, যা কৃষক বা তার পরিবারের দ্বারা ব্যবহৃত হয় এবং যার মূল্যমান স্থানীয় পৌরসভা বা নগর পালিকার দ্বারা নির্ধারিত গৃহ-করের (House Tax) মোট মূল্যমানের সমান বা তার চেয়ে কম।
বড় ভুল ধারণা: কৃষি আয় কি সত্যিই আয়কর-মুক্ত?
এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। উত্তরটা হলো “হ্যাঁ এবং না”। দুটি পরিস্থিতি দেখা যাক:
- পরিস্থিতি ১: শুধুমাত্র কৃষি আয় যদি আপনার বছরের মোট আয় শুধুমাত্র কৃষি আয় হয়, তাহলে সেই আয়ের উপর কোনো আয়কর ধরা হয় না। আপনাকে আয়কর রিটার্ন (ITR) ফাইল করারও প্রয়োজন নেই।
- পরিস্থিতি ২: কৃষি আয় + অন্যান্য আয় (বেতন, ব্যবসা, সুদ ইত্যাদি) এখানেই জটিলতা শুরু হয়। যদিও আপনার কৃষি আয়ের উপর সরাসরি কর দিতে হয় না, তবে এটি আপনার অন্যান্য আয়ের উপর করের হার বাড়িয়ে দেয়। এই পদ্ধতিকে বলা হয় “আংশিক সংহতকরণ” (Partial Integration)।কীভাবে কাজ করে?
- সরকার আপনার কৃষি আয় এবং অন্যান্য আয় দুটোকে যোগ করে মোট আয় বের করে।
- এই মোট আয়ের উপর একটি কাল্পনিক কর হিসাব করে।
- তারপর, শুধুমাত্র আপনার অন্যান্য আয়ের উপর কর হিসাব করে।
- এই দুই হিসাবের পার্থক্যই হলো আপনার দেওয়ার মোট আয়কর।
কারিগরি তথ্য (Technical Aside): আংশিক সংহতকরণের নিয়মটি আয়কর আইনের ধারা 10(1) এবং ধারা 87 এর অধীনে আসে। এটি শুধুমাত্র তখনই প্রযোজ্য হয় যদি:
- আপনার নেট কৃষি আয় ₹5,000 এর বেশি হয়।
- আপনার অন্যান্য আয় (কৃষি ব্যতীত) মৌলিক ছাড়সীমা (Basic Exemption Limit, যেমন ₹2.5 লক্ষ) অতিক্রম করে।
হিসাবের উদাহরণ: ধরুন, রমেশ বাবুর বেতন আয় (অন্যান্য আয়) ₹8,00,000 এবং কৃষি আয় ₹2,00,000।
- ধাপ ১: মোট আয় = ₹8,00,000 + ₹2,00,000 = ₹10,00,000। এই মোট আয়ের উপর কর (পুরানো স্ল্যাব অনুযায়ী) হবে ₹1,12,500 + ₹10,000 (সেস) = ₹1,22,500।
- ধাপ ২: শুধুমাত্র অন্যান্য আয় (₹8,00,000) এর উপর কর হবে ₹62,500 + ₹5,000 (সেস) = ₹67,500।
- ধাপ ৩: চূড়ান্ত করযোগ্য আয়কর = (ধাপ ১ – ধাপ ২) = ₹1,22,500 – ₹67,500 = ₹55,000। লক্ষ্য করুন, যদি কৃষি আয় না থাকতো, তাহলে রমেশ বাবুর মাত্র ₹67,500 কর দিতে হতো। কৃষি আয়ের কারণে তার কর বেড়ে গেল।
এই ₹55,000 হলো অতিরিক্ত ট্যাক্স —
অর্থাৎ কৃষি আয় থাকার কারণে মোট ট্যাক্স বেড়ে ₹67,500 + ₹55,000 = ₹1,22,500 হয়েছে।
না থাকলে ট্যাক্স হতো ₹67,500 মাত্র।
কোন কৃষি আয় আয়কর-মুক্ত? (Exemptions)
সাধারণত, নিচের ধরনের আয়গুলি কৃষি আয় হিসেবে বিবেচিত হয় এবং আয়কর-মুক্ত:
- ধান, গম, ডাল, তৈলবীজ ইত্যাদি খাদ্যশস্য বিক্রি থেকে আয়।
- শাকসবজি, ফলমূল, ফুল বিক্রি থেকে আয়।
- চা, কফি, রাবার ইত্যাদি উৎপাদন ও বিক্রি থেকে আয় (কিছু শর্ত সাপেক্ষে)।
- একটি নার্সারি থেকে চারা গাছ বিক্রি করে আয়।
- কৃষিজমি থেকে কাঠ বা অন্যান্য বনজ পণ্য বিক্রি করে আয় (যদি সেগুলি কৃষিকাজের অংশ হিসেবে উৎপাদিত হয়)।
কোন আয় কৃষি আয় বলে গণ্য হবে না?
এটা জানা খুব জরুরি, নয়তো আপনি ভুল করতে পারেন।
- প্রক্রিয়াজাত পণ্য: আখ থেকে গুড় বা চিনি তৈরি করে বিক্রি করা, পাট থেকে সুতা তৈরি করা, দুধ থেকে মিষ্টি বা পনির তৈরি করে বিক্রি করা। এগুলি শিল্প কার্যকলাপ হিসেবে গণ্য হয় এবং এর উপর আয়কর লাগে।
- পশুপালন ও মৎস্যচাষ: গবাদি পশু, মুরগি, হাঁস পালন বা মাছ চাষ থেকে আয় সাধারণত কৃষি আয় হিসেবে গণ্য হয় না, যদি না এটি কৃষিকাজের সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত থাকে।
- ট্রাক্টর বা যন্ত্রপাতি ভাড়া দেওয়া: আপনার ট্রাক্টর অন্য কৃষককে ভাড়া দিয়ে যে আয় হবে, তা ব্যবসা আয় হিসেবে গণ্য হবে, কৃষি আয় নয়।
- কৃষি জমি বিক্রি করে আয়: কৃষি জমি বিক্রি করে যে মুনাফা হয়, তা মূলধনী লাভ (Capital Gain) হিসেবে গণ্য হয় এবং এর উপর আয়করের নিয়ম আলাদাভাবে প্রযোজ্য।
টিপস এবং স্ট্র্যাটেজি (Tips & Strategies)
- হিসাব রাখুন: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ হলো আপনার কৃষি আয় এবং খরচের একটি বিস্তারিত হিসাব রাখুন। বীজ, সার, সেচ, শ্রমিকদের মজুরি সবকিছুর রেকর্ড রাখুন। এটি আপনার নেট কৃষি আয় প্রমাণ করতে সাহায্য করবে।
- আলাদা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট: কৃষি আয় এবং অন্যান্য আয়ের জন্য আলাদা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করুন। এতে হিসাব রাখা সহজ হয় এবং আয়কর দপ্তরের কাছে আপনার আয়ের উৎস স্পষ্ট হয়।
- কৃষি অবকাঠামোতে বিনিয়োগ: আপনার কৃষি আয় থেকে আপনি খামারের উন্নয়ন, সেচ ব্যবস্থা, গুদাম ইত্যাদিতে বিনিয়োগ করতে পারেন। এতে আপনার ভবিষ্যৎ আয় বাড়বে এবং খরচ হিসেবে দেখানো যেতে পারে।
- পারিবারিক কাঠামো: অনেক সময় কৃষি জমি পারিবারিক সম্পত্তি হয়। জমির মালিকানা সঠিকভাবে বণ্টন করে নিলে প্রত্যেক ব্যক্তির আয় কমে যায়, যা করের বোঝা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
- লুপহোল (Loophole): কিছু মানুষ কৃষি আয়ের নামে কালো টাকা সাদা করার চেষ্টা করেন। যেমন, বেআইনি উৎস থেকে আসা টাকা কৃষি আয় হিসেবে দেখানো। এটি একটি অপরাধমূলক কাজ এবং কর আইনে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। এটা কখনই করবেন না।
মনে রাখার কথা / যা করবেন না (Things to Remember / Not to Do)
- মিশিয়ে ফেলবেন না: ব্যক্তিগত খরচ এবং কৃষি খরচ কখনই মিশিয়ে ফেলবেন না।
- ভুল তথ্য দেবেন না: অন্যান্য আয়কে কৃষি আয় বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। আয়কর দপ্তরের কাছে ধরা পড়লে জরিমানা এবং আইনি জটিলতা হতে পারে।
- ITR ফাইল করতে ভুলবেন না: যদি আপনার অন্যান্য আয় মৌলিক ছাড়সীমা (₹2.5 লক্ষ) অতিক্রম করে, তবে আপনাকে অবশ্যই ITR ফাইল করতে হবে, যদিও আপনার করযোগ্য আয় শূন্য হয়।
- রশিদ রাখুন: কৃষি সংক্রান্ত সমস্ত কেনাকাটা ও বিক্রয়ের রশিদ বা বিল সংরক্ষণ করুন। এগুলি প্রমাণ হিসেবে কাজে আসবে।
জিএসটি (GST) এবং কৃষি
আয়করের মতো জিএসটি-র ক্ষেত্রেও কৃষি খাতের জন্য বিশেষ নিয়ম রয়েছে।
কৃষিক্ষেত্রে জিএসটি: মূল নীতি
জিএসটি-র মূল নীতি হলো কৃষকদের সুরক্ষা দেওয়া। তাই বেশিরভাগ অপ্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য (Unprocessed Agricultural Produce) জিএসটি-র আওতামুক্ত। অর্থাৎ, এগুলি বিক্রি করলে কোনো জিএসটি দিতে হয় না।
জিএসটি-মুক্ত কী কী? (GST Exempt Items)
নিচের কৃষিপণ্যগুলি জিএসটি-মুক্ত:
- শস্য: ধান, গম, বাজরা, জোয়ার, ডালজাতীয় ফসল ইত্যাদি।
- ফল ও সবজি: সব ধরনের তাজা ফল ও সবজি।
- অন্যান্য: আলু, পেঁয়াজ, ডিম, মাছ (তাজা), দুধ, মধু, পান, পাতা, ফুলকপি, গোলমরিচ, হলুদ (কাঁচা), আদা (কাঁচা) ইত্যাদি।
কারিগরি তথ্য (Technical Aside): জিএসটি আইনের তফসিলে এই ছাড়গুলি তালিকাভুক্ত করা আছে। যেহেতু এগুলি NIL রেটের আওতায় পড়ে, তাই কোনো কৃষক বা ব্যবসায়ী এই পণ্যগুলি বিক্রি করলে জিএসটি নিবন্ধন (GST Registration) করারও প্রয়োজন নেই।
জিএসটি-মুক্ত নয় কী কী? (Taxable Items)
যেসব পণ্য বা পরিষেবা কৃষির সাথে যুক্ত কিন্তু জিএসটি-মুক্ত নয়:
- প্রক্রিয়াজাত খাদ্য: চাল, আটা, ময়দা, প্যাকেটজাত খাবার, ফলের রস, চা, কফি, চিনি, বিস্কুট ইত্যাদি। এগুলির উপর জিএসটি লাগে (যেমন, 5%, 12% বা 18%)।
- কৃষি যন্ত্রপাতি: ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার, হারভেস্টার, সেচ পাম্প, ড্রিপ ইরিগেশন সিস্টেম ইত্যাদির উপর জিএসটি লাগে।
- কৃষি উপকরণ: সার, কীটনাশক, বীজ (কিছু ক্ষেত্রে ছাড় আছে) ইত্যাদির উপর জিএসটি প্রযোজ্য।
- পরিষেবা: কৃষি পণ্য পরিবহন, গুদামজাতকরণ (Warehousing), ঠিকাদারি কৃষি (Contract Farming) এর মতো পরিষেবাগুলির উপর জিএসটি লাগে।
বাস্তব উদাহরণ (Real-World Example)
কৃষ্ণদেব একজন কৃষক। তিনি তার মাঠ থেকে ধান বিক্রি করেন। এই ধান বিক্রি থেকে তার আয় সম্পূর্ণ জিএসটি-মুক্ত। কিন্তু তিনি একটি ছোট চালকলও চালান, যেখানে ধান থেকে চাল তৈরি করে বিক্রি করেন। এই চাল বিক্রি করার সময় তাকে জিএসটি (বর্তমানে 5%) নিয়ে বিল করতে হবে এবং সরকারকে জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে তাকে জিএসটি নিবন্ধন করতে হবে।
কম্পোজিশন স্কিম (Composition Scheme)
ছোট কৃষক বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য জিএসটি-র একটি দারুণ ব্যবস্থা হলো কম্পোজিশন স্কিম।
- কীভাবে কাজ করে: এই স্কিমের অধীনে, আপনি আপনার বার্ষিক টার্নওভারের উপর একটি নির্দিষ্ট কম হারে (যেমন 1%) জিএসটি দিতে পারেন। আপনাকে জটিল হিসাব রাখতে হয় না এবং মাসিক রিটার্নের পরিবর্তে ত্রৈমাসিক রিটার্ন ফাইল করতে হয়।
- শর্ত: এই স্কিমের জন্য আপনার বার্ষিক টার্নওভার ₹1.5 কোটির কম হতে হবে (কিছু রাজ্যে সীমা আলাদা)।
- সুবিধা: কম জিএসটি হার এবং সহজ কমপ্লায়েন্স।
- অসুবিধা: আপনি ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট (ITC) দাবি করতে পারবেন না। অর্থাৎ, আপনি যে সার, যন্ত্রপাতি কিনেছেন তার উপর জিএসটি ফেরত পাবেন না।
কারিগরি তথ্য (Technical Aside): কম্পোজিশন স্কিমের অধীনে নিবন্ধিত একজন ব্যক্তি অন্য রাজ্যে পণ্য সরবরাহ করতে পারেন না বা ই-কমার্স অপারেটরের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করতে পারেন না। এছাড়া, তাদের বিলে “Composition Taxable Person” লিখে দিতে হয় এবং তারা গ্রাহকের কাছ থেকে জিএসটি নিতে পারেন না।
টিপস এবং স্ট্র্যাটেজি (Tips & Strategies)
- জিএসটি নিবন্ধনের প্রয়োজনীয়তা বুঝুন: আপনি যদি শুধু জিএসটি-মুক্ত কাঁচা পণ্য বিক্রি করেন, তবে আপনার জিএসটি নিবন্ধনের প্রয়োজন নেই। কিন্তু যদি আপনি জিএসটি-যোগ্য পণ্য বিক্রি করেন বা পরিষেবা দেন, এবং আপনার টার্নওভার ₹২০ লক্ষ (পরিষেবার ক্ষেত্রে ₹১০ লক্ষ) অতিক্রম করে, তবে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক।
- ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট (ITC) এর সুবিধা নিন: যদি আপনি স্বাভাবিক জিএসটি স্কিমে থাকেন, তবে কৃষি যন্ত্রপাতি, সার, প্যাকেজিং মেটেরিয়াল ইত্যাদি কেনার সময় যে জিএসটি দিচ্ছেন, সেটা আপনি আপনার চূড়ান্ত জিএসটি দায় থেকে বাদ দিতে পারেন। এটি আপনার খরচ কমায়।
- কম্পোজিশন স্কিম বিবেচনা করুন: আপনি যদি ছোট ব্যবসায়ী হন এবং আপনার ITC দাবি করার প্রয়োজন না হয়, তবে কম্পোজিশন স্কিম আপনার জন্য সহজ এবং লাভজনক হতে পারে।
মনে রাখার কথা / যা করবেন না (Things to Remember / Not to Do)
- ধরে নেবেন না সবকিছু ছাড়: কোনো পণ্য বিক্রি করার আগে সেটি জিএসটি-মুক্ত কিনা তা যাচাই করে নিন।
- জিএসটি বিল দিন: আপনি যদি জিএসটি-যোগ্য পণ্য বিক্রি করেন, তবে অবশ্যই সঠিক জিএসটি বিল দিন এবং গ্রাহকের কাছ থেকে জিএসটি নিন।
- রিটার্ন ফাইল করতে ভুলবেন না: জিএসটি নিবন্ধিত হলে সময়মতো রিটার্ন ফাইল করা আবশ্যিক। না করলে জরিমানা হতে পারে।
- ছাড়প্রাপ্ত পণ্যের জন্য জিএসটি বিল দেবেন না: যেসব পণ্য জিএসটি-মুক্ত, সেগুলির জন্য কখনই জিএসটি চার্জ করে বিল করবেন না।
উপসংহার
কৃষি আয় একটি বিশেষ ধরনের আয়, এবং এর উপর আয়কর ও জিএসটি দুটি আলাদা নীতি প্রযোজ্য। যদিও কৃষি আয় সরাসরি করযোগ্য নয়, তবুও এটি আপনার মোট করের হার বাড়িয়ে দিতে পারে। অন্যদিকে, জিএসটি-র ক্ষেত্রে কাঁচা পণ্য ছাড় পেলেও প্রক্রিয়াজাত পণ্য ও পরিষেবার উপর কর লাগে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ হলো, আপনার আয়ের প্রকৃতি বুঝে নিন, সঠিক হিসাব রাখুন এবং প্রয়োজনে একজন যোগ্য কর পরামর্শদাতা বা সিএ-এর সাথে পরামর্শ করুন। এতে আপনি আইন মেনে চলতে পারবেন এবং কর সংক্রান্ত কোনো জটিলতায় পড়বেন না।
মতামত দিন